Dhaka 5:11 pm, Friday, 5 December 2025

বায়রার ফখরুলকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব করেছে আদালত

মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তারের পর জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার (BAIRA) সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
আদালত নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইওকে হাজির হয়ে ফখরুলকে মুক্তি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক মিলন, সুমন ভুইয়া ও জিল্লাল হোসেনসহ অন্যান্য আইনজীবীর উপস্থিতিতে বাদীর দাখিল করা একটি আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। বাদী আবেদনটির সঙ্গে ফখরুলকে গ্রেপ্তার ও পরে মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করেন।

এর আগে, গত সোমবার রাতে বিদেশ থেকে ফেরার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বনানী থানা পুলিশ তাকে মুক্তি দেয়।

মামলার নথি অনুযায়ী, বায়রার সাবেক নেতা ফখরুল ইসলাম ও তার সহযোগী জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও প্রায় ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৪ নভেম্বর বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন আরইউএল ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার মো. রুবেল হোসেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ফখরুল ও জসিম উদ্দিন মালয়েশিয়ার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে (নিউ ভিশন গ্রিন ল্যান্ড এসএনডি, চাই চাং ফুড ইন্ডাস্ট্রি এসএনডি) শ্রমিক পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দেন। ২০২৩ সালের ২৭ মে, চুক্তি অনুযায়ী ৫৫ জন কর্মী পাঠানোর কথা বলে তারা কর্মীপ্রতি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।

তবে বাস্তবে তারা মাত্র ২৮ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠান, এবং ওই কর্মীদের প্রতিশ্রুত কোম্পানিতে না পাঠিয়ে অন্যত্র আটকে রাখেন, ভয়ভীতি দেখান ও অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেন। পরে শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হলেও তাদের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এখনো আসামিদের কাছে বাদীর ২৮ জন কর্মীর পুনর্বাসন বা দেশে ফেরত আনার ব্যয় এবং অতিরিক্ত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু আসামিরা টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বাদীকে হুমকি দিচ্ছে।

এছাড়াও, ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অতীতেও প্রতারণা ও মানবপাচারের মামলা ছিল, তবে তিনি বিভিন্নভাবে আইনগত ফাঁকফোকর ব্যবহার করে রেহাই পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

sabuj bala

Popular Post

শাজাহান খানের মেয়ে ঐশীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

বায়রার ফখরুলকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে তলব করেছে আদালত

Update Time : 05:49:24 pm, Wednesday, 12 November 2025

মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তারের পর জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার (BAIRA) সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
আদালত নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইওকে হাজির হয়ে ফখরুলকে মুক্তি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক মিলন, সুমন ভুইয়া ও জিল্লাল হোসেনসহ অন্যান্য আইনজীবীর উপস্থিতিতে বাদীর দাখিল করা একটি আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। বাদী আবেদনটির সঙ্গে ফখরুলকে গ্রেপ্তার ও পরে মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করেন।

এর আগে, গত সোমবার রাতে বিদেশ থেকে ফেরার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বনানী থানা পুলিশ তাকে মুক্তি দেয়।

মামলার নথি অনুযায়ী, বায়রার সাবেক নেতা ফখরুল ইসলাম ও তার সহযোগী জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও প্রায় ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৪ নভেম্বর বনানী থানায় মামলা দায়ের করেন আরইউএল ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার মো. রুবেল হোসেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ফখরুল ও জসিম উদ্দিন মালয়েশিয়ার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে (নিউ ভিশন গ্রিন ল্যান্ড এসএনডি, চাই চাং ফুড ইন্ডাস্ট্রি এসএনডি) শ্রমিক পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দেন। ২০২৩ সালের ২৭ মে, চুক্তি অনুযায়ী ৫৫ জন কর্মী পাঠানোর কথা বলে তারা কর্মীপ্রতি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।

তবে বাস্তবে তারা মাত্র ২৮ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠান, এবং ওই কর্মীদের প্রতিশ্রুত কোম্পানিতে না পাঠিয়ে অন্যত্র আটকে রাখেন, ভয়ভীতি দেখান ও অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেন। পরে শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হলেও তাদের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এখনো আসামিদের কাছে বাদীর ২৮ জন কর্মীর পুনর্বাসন বা দেশে ফেরত আনার ব্যয় এবং অতিরিক্ত ১ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু আসামিরা টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো বাদীকে হুমকি দিচ্ছে।

এছাড়াও, ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অতীতেও প্রতারণা ও মানবপাচারের মামলা ছিল, তবে তিনি বিভিন্নভাবে আইনগত ফাঁকফোকর ব্যবহার করে রেহাই পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।