Dhaka 5:52 pm, Friday, 5 December 2025

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কী এবং এর সম্ভাব্য খরচ কত হতে পারে?

হঠাৎ দুর্ঘটনা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা গুরুতর অসুস্থতার মতো সংকটময় মুহূর্তে জীবন বাঁচাতে প্রতিটি মিনিটই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে রোগী যদি দূরবর্তী এলাকায় থাকেন বা দ্রুত উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন সড়কপথে অপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা—যা রোগীকে আকাশপথে অতি দ্রুত এবং নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কার্যকর উপায়।

উন্নত লাইফ সাপোর্ট–সজ্জিত বিশেষ উড়োজাহাজ বা হেলিকপ্টারগুলো শুধু দ্রুত পরিবহনই নয়, বরং যাত্রাপথেই রোগীকে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সুবিধা দেয়। এতে থাকে ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর, মনিটর, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অন্যান্য লাইফ সাপোর্ট সরঞ্জাম। রোগীর সঙ্গে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক টিম, যারা পুরো যাত্রায় রোগীর অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ধরন

১. ফিক্সড-উইং ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স

ফিক্সড-উইং এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সাধারণত জেট বা টার্বোপ্রপ ধরনের বিমান হয়ে থাকে। দীর্ঘ দূরত্ব বা আন্তঃশহর ও আন্তর্জাতিক রুটে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে এগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। বড় কেবিন থাকার কারণে এখানে উন্নত, পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেটআপ স্থাপন করা যায়। দূরপাল্লার যাত্রায় রোগীকে স্থিতিশীল ও আরামদায়ক পরিবেশে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য এ ধরনের বিমান অত্যন্ত কার্যকর।

২. রোটারি-ফ্লাইট (হেলিকপ্টার) অ্যাম্বুলেন্স

রোটারি-ফ্লাইট বা হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্স স্বল্প দূরত্বে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য উপযুক্ত। বড় রানওয়ের প্রয়োজন না হওয়ায় এগুলো হাসপাতাল চত্বর, খোলা মাঠ বা নির্দিষ্ট জরুরি ল্যান্ডিং প্যাডে ওঠানামা করতে পারে। দুর্গম এলাকা থেকে রোগী উদ্ধার বা নিকটস্থ বিশেষায়িত হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম। শহর বা দেশের অভ্যন্তরে ‘বেড-টু-বেড’ জরুরি সেবা প্রদানে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সম্ভাব্য খরচ

প্রিমিয়াম সেবা হওয়ায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের খরচ তুলনামূলক বেশি। বাংলাদেশ হেলিকপ্টার সেবার তথ্য অনুযায়ী, দেশের ভেতরে এই সেবার ভাড়া অঞ্চলভেদে প্রায় ৯০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। দেশের বাইরে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে খরচ কয়েক লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
খরচ নির্ধারণে প্রধান বিষয়গুলো হলো—স্থানান্তরের দূরত্ব, রুটের ধরন, ব্যবহৃত বিমান বা হেলিকপ্টারের ধরণ, রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ যন্ত্রপাতি (যেমন ভেন্টিলেটর, ইসিএমও) এবং সংশ্লিষ্ট মেডিকেল টিমের উপস্থিতি। পাশাপাশি বিমানবন্দর ব্যবহারের ফি, ল্যান্ডিং চার্জ ও লজিস্টিক খরচও মোট ব্যয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

সূত্র: ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্লাস ডট কম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sabuj Bala

Popular Post

শাজাহান খানের মেয়ে ঐশীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কী এবং এর সম্ভাব্য খরচ কত হতে পারে?

Update Time : 08:36:53 am, Friday, 5 December 2025

হঠাৎ দুর্ঘটনা, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা গুরুতর অসুস্থতার মতো সংকটময় মুহূর্তে জীবন বাঁচাতে প্রতিটি মিনিটই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে রোগী যদি দূরবর্তী এলাকায় থাকেন বা দ্রুত উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন সড়কপথে অপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবা—যা রোগীকে আকাশপথে অতি দ্রুত এবং নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কার্যকর উপায়।

উন্নত লাইফ সাপোর্ট–সজ্জিত বিশেষ উড়োজাহাজ বা হেলিকপ্টারগুলো শুধু দ্রুত পরিবহনই নয়, বরং যাত্রাপথেই রোগীকে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সুবিধা দেয়। এতে থাকে ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর, মনিটর, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং অন্যান্য লাইফ সাপোর্ট সরঞ্জাম। রোগীর সঙ্গে থাকেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক টিম, যারা পুরো যাত্রায় রোগীর অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ধরন

১. ফিক্সড-উইং ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স

ফিক্সড-উইং এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সাধারণত জেট বা টার্বোপ্রপ ধরনের বিমান হয়ে থাকে। দীর্ঘ দূরত্ব বা আন্তঃশহর ও আন্তর্জাতিক রুটে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে এগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। বড় কেবিন থাকার কারণে এখানে উন্নত, পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেটআপ স্থাপন করা যায়। দূরপাল্লার যাত্রায় রোগীকে স্থিতিশীল ও আরামদায়ক পরিবেশে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য এ ধরনের বিমান অত্যন্ত কার্যকর।

২. রোটারি-ফ্লাইট (হেলিকপ্টার) অ্যাম্বুলেন্স

রোটারি-ফ্লাইট বা হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্স স্বল্প দূরত্বে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য উপযুক্ত। বড় রানওয়ের প্রয়োজন না হওয়ায় এগুলো হাসপাতাল চত্বর, খোলা মাঠ বা নির্দিষ্ট জরুরি ল্যান্ডিং প্যাডে ওঠানামা করতে পারে। দুর্গম এলাকা থেকে রোগী উদ্ধার বা নিকটস্থ বিশেষায়িত হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে হেলিকপ্টার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম। শহর বা দেশের অভ্যন্তরে ‘বেড-টু-বেড’ জরুরি সেবা প্রদানে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের সম্ভাব্য খরচ

প্রিমিয়াম সেবা হওয়ায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের খরচ তুলনামূলক বেশি। বাংলাদেশ হেলিকপ্টার সেবার তথ্য অনুযায়ী, দেশের ভেতরে এই সেবার ভাড়া অঞ্চলভেদে প্রায় ৯০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। দেশের বাইরে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে খরচ কয়েক লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
খরচ নির্ধারণে প্রধান বিষয়গুলো হলো—স্থানান্তরের দূরত্ব, রুটের ধরন, ব্যবহৃত বিমান বা হেলিকপ্টারের ধরণ, রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ যন্ত্রপাতি (যেমন ভেন্টিলেটর, ইসিএমও) এবং সংশ্লিষ্ট মেডিকেল টিমের উপস্থিতি। পাশাপাশি বিমানবন্দর ব্যবহারের ফি, ল্যান্ডিং চার্জ ও লজিস্টিক খরচও মোট ব্যয়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

সূত্র: ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্স প্লাস ডট কম